উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেলকুচিতে প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা

S M Ashraful Azom
0
উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেলকুচিতে প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা
জহুরুল ইসলাম, বেলকুচি প্রতিনিধি: উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জের বেলকুচির আওয়ামীলীগ এখন তিন ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনার মাঠে গরম হাওয়া বইছে। দলীয় কোন্দলে চলছে মারধর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ এবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এদিকে নৌকা প্রতীক না পাওয়ায় স্বতন্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতায় নেমেছেন সাবেক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের জামাতা নরুল ইসলাম সাজেদুল ও ঢাকা বনানী থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেনের ছোট ভাই মীর সেরাজুল ইসলাম।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সন্ধায় আওয়ামীলীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) মীর সেরাজুল ইসলামের সমর্থকেরা অপর বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) নূরুল ইসলাম সাজেদুলের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে নীর্বাচনী অফিস ভাংচুর ও মারপিট করায় সেকেন্দার আলীসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার আজুগড়া-জামতৈল এলাকায় দোয়াত কলম প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে।

দোয়াত কলম মার্কা স্বাতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাজেদুল ও তার স্ত্রী সাবেক মন্ত্রী-জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের মেয়ে সোমা বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস আওয়ামালীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আকন্দের সাথে তার চরম দ্বন্দ থাকার কারনে নৌকার পক্ষে কাজ না করে তিনি আনারস মার্কা স্বতন্র প্রার্থী মীর সেরাজুল ইসলামের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করছেন।


সাজেদুল ইসলাম আরও বলেন, আমার শশুর সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস শ্যালক মিঠু ও লাজুক বিশ্বাস (ইউপি চেয়াম্যান) লোকজন নিয়ে আজুগড়াস্হ আমার নীর্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং ৫জনকে মেরে গুরুতর আহত করে।

আহত সেকান্দর আলী বলেন্, বুধবার সন্ধায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, তার ছেলে মিঠু ও লাজুক বিশ্বাস স্বদলবলে প্রথমে অফিস ভাংচুর পরে আমাকে ও আমার স্ত্রী শাহীনূর খাতুন, আব্দুল হাকিম মন্ডল, বাবু মন্ডল ও কালু মন্ডলকে বেদম মারপিট করে। এসময় পার্শে শুকুর আলীর চায়ের দোকান ভাংচুর করে এবং হুমকী দিয়ে বলা হয় নির্বাচনী ক্যাম্প বন্ধ করা না হলে এ এলাকায় কাউকে ভোট দিতে দেয়া হবেনা। এঘটনায় সাবেক মন্ত্রী ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তারই জামাতা স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাজেদুল ঐদিন রাতে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এরাতে এসপি সাহেবের সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দলীয় কোন্দলের কারণ সম্পর্কে জানা যায়, এমপি নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস মনোনয়ন বঞ্চিত হন। আব্দুল মজিদ মন্ডল মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দ্বন্দ চলতে থাকে। এমনকি দলে এখন চলছে গ্রুপিং, সাবেক এমপি মজিদ মন্ডল গ্রুপ ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস গ্রুপ। নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ আলী আকন্দ তিনি আগে বিশ্বাস গ্রুপে ছিলেন এখন মন্ডল গ্রুপে আছেন। এদিকে সাবেক মন্ত্রীর জামাতা সাজেদুলের ছোট ভাই যুবলীগের নেতা সাজ্জাদুল হক রেজার সাথে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রী পৌর চেয়ারম্যান আশানূর বিশ্বাসের সাথে দ্বন্দ মারাত্নক আকার ধারন করে। এমনকি মামলা পর্যন্ত গড়ায়, এতে সাজ্জাদুল হক রেজাকে জেলে পর্যন্ত যেতে হয়। এমতাবস্হায় রেজা আব্দুল মজিদ মন্ডল গ্রুপে যোগ দেয়। রেজা উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিক না পাওয়ায় সে বিদ্রোহী প্রার্থী না হয়ে তার বড় ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজেদুলের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামার কারনে জামাইর সাথে শশুরের দ্বন্দের মাত্রা বেড়ে যায় বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।
⇘সংবাদদাতা: জহুরুল ইসলাম

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top