সেবা ডেস্ক: হত দরিদ্র হবার কারণে কোনো অপরাধ না করেও কারাবরণ করতে হচ্ছে খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকে। নিজ সন্তান ও তার বাবা-মা যাতে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারে তার জন্যই দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বেগম জিয়াকে সেবা ও সঙ্গ দেয়ার নামে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেন গৃহকর্মী ফাতেমা।
জানা গেছে, এখনো কাটেনি ফাতেমার পরিবারের অভাব। পরিবারে দেখা দিয়েছে তীব্র অর্থ সংকট। বেগম জিয়ার সঙ্গে কারাগারে থাকলে উচ্চ বেতন-ভাতা তার পরিবারকে দেয়ার ওয়াদা করেছিল বিএনপি। কিন্তু বিগত ১৩ মাস বিএনপির তরফ থেকে কোন রকম বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছে ফাতেমার পরিবার। অর্থ কষ্টে লক্ষাধিক টাকার ঋণের জালে আটকা পড়েছে ফাতেমার পরিবার। পাশাপাশি মাকে দেখতে না পেরে ফাতেমার ২ সন্তান কষ্টে রয়েছে বলেও জানা গেছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
একটি সূত্র বলছে, কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় ফাতেমার। গত প্রায় ১৪ মাসে নিজের দুই সন্তানের সঙ্গে একবারের জন্যও কথা হয়নি তার। এসময়ে তার বাবা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মাত্র ২ বার দেখা করতে পেরেছে সে।
এর আগে ১৪ মার্চ কারাবন্দী ফাতেমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কারাগারে আসেন ফাতেমার বাবা রফিকুল ইসলাম। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তিনি তার মেয়ের সাথে দেখা করতে না পেরে বিমর্ষ হয়ে পড়েন তিনি। প্রতারণার রাজনীতির কবলে পড়ে বিনাদোষে বেগম জিয়ার পাপের ভাগীদার হয়েও ফাতেমা তিলে তিলে নিজেকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে বলেও আক্ষেপ করেন রফিকুল। ফাতেমা না থাকার কারণে তার পরিবার আজকে না খেয়ে মরতে বসেছে। যদিও খালেদা জিয়া কারাগারে যাবার প্রথম দুই মাস ফাতেমার বেতন প্রদান করেছিলো বিএনপি। কিন্তু বর্তমানে তাকে কোনো টাকা পয়সাও দেয়া হচ্ছে না। এত বড় ত্যাগ স্বত্বেও ফাতেমার প্রতি বিএনপির এ হীনমন্ন রাজনীতি দলটির সকল অর্জনকে ম্লান করে দিবে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রফিকুল ইসলাম।
জানা যায়, ১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা হিসেবে চাকরি নেন ফাতেমা। সে সময় বেতন ধরা হয় ২ হাজার টাকা। ১০ বছরে সে বেতন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার টাকায়। বিনিময়ে বেগম জিয়ার সেবায় ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে থাকতে হতো ফাতেমাকে। আড়াই তিন বছর পর ছুটি মিল তো। সেসময় সন্তানদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারলেও এখন জেলে থাকায় সে সুযোগও নেই।
একটি সূত্র বলছে, আগে ফাতেমার বেতনের টাকা খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের স্ত্রী মানি অর্ডারের মাধ্যমে তার গ্রামের বাড়ি ভোলাতে পাঠালেও গত ১৩ মাস ধরে সেটাও বন্ধ। এমন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে তার বৃদ্ধ বাবা ও দুই সন্তান। টাকার অভাবে সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধের দ্বারপ্রান্তে। অভাব থেকে বাঁচতে ফাতেমার অতিসত্বর মুক্তি চান তার বাবা।
কিন্তু কবে ফাতেমা মুক্তি পাবে জানে না কেউ। এমনকি খালেদা জিয়ার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও প্রতিবার ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ফাতেমার বাবা রফিকুল। খালেদা কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে ন্যূনতম সহযোগিতার আশাও ছেড়ে দিয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব রফিকুল ইসলাম।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।