ফরিদপুর: জনগণের মন জয় করতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী রায়হান জামিল। মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের ঘোষণা দিয়ে বিপত্তি ডেকে আনেন তিনি।
![]() |
১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ: জনতার ক্ষোভে পালালেন 'এমপি প্রার্থী', মাফ চেয়ে এলাকা ছাড়লেন |
ঘোষণা শুনে হাজারো মানুষের ভিড় এতটাই বেড়ে যায় যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত মাফ চেয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন এই প্রার্থী।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই ঘটনা ঘটে। রায়হান জামিল ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিতরণের উদ্যোগ নেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রায়হান জামিল সপ্তাহখানেক আগে সদরপুরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটিয়ে ঘোষণা দেন, তিনি ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেবেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সকাল থেকেই শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমান।
আরও পড়ুন:
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রায়হান জামিল মাত্র ৬০০টি ইলিশ মাছ নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু ইলিশ মাছ নেওয়ার জন্য দুই সহস্রাধিক লোক সেখানে জড়ো হন। বিতরণ শুরুর একপর্যায়ে মাছ ফুরিয়ে গেলে মাছ নিতে না পাওয়া লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে রায়হান জামিল পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
ইলিশ নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, 'সকাল থেকে ইলিশ মাছ নেওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার কপালে মাছ জোটে নাই।'
রায়হান জামিল ভাসানচর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পৌঁছালে ক্ষুব্ধ জনতা তার গাড়ি আটক করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় কোনোমতে তিনি সেখান থেকে প্রাণে রক্ষা পান।
রায়হান জামিল (৩৬) ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার এমপিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. এখলাস জানান, রায়হান গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি বেশ কয়েক বছর ঢাকায় থাকেন এবং সেখানে ব্যবসা করেন।
এ বিষয়ে রায়হান জামিল বলেন, 'এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে দামি মাছ ইলিশ। যে মাছটি কিনে খাওয়ার মতো সক্ষমতা অনেকের নেই। সেই চিন্তা থেকে আমি আমার এলাকার প্রায় ৬০০ মানুষের মধ্যে প্রতি পিস ১০ টাকায় ইলিশ মাছ তাদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এ খবর পেয়ে সেখানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হলে সবাইকে মাছ দিতে পারিনি। পরে এ ঘটনার জন্য সবার কাছে মাফ চেয়ে আমি ফিরে আসি।'
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমি আগেই রায়হান জামিলকে সতর্ক করেছিলাম। তিনি আমাদের কথা না শুনে এ বিতরণ কার্যক্রম চালান। পরে বিশৃঙ্খলার খবর শুনে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।'
বাংলাদেশ
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।