
মধুপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মধুপুরে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে রোপনকৃত আমগাছের বড় বড় বেশ কয়েকটি ডাল কাটার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার দোখলা রেঞ্জ অফিসের নিকটেই রেষ্ট হাউজের পাশে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত আম গাছটির ডালপালা কেটে বিক্রি করা হয়েছে।
এমনভাবে ডাল কাটার ফলে ঐতিহাসিক গাছটি এখন মরার উপক্রম। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা মানিক মিয়া তার লোকজন দিয়ে গাছটির ডাল কেটে বিক্রি করেছেন। ঐতিহাসিক ওই গাছটির ডাল কাটায় মধুপুরের সব মহলে তোলপাড় চলছে। জনমনেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুপুরের অরণখোলা মৌজায় সংরক্ষিত বন ভূমিতে ১৯৬২ সনে নির্মিত বন বিশ্রামাগারটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর পূণ্য স্মৃতিবহ। ১৯৭১ সনের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ সর্বশেষ এই বন বিশ্রামাগারে অবস্থান করেছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধান রচনার সাথেও এই বনবিশ্রামাগারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে স্মৃতি ফলক দিয়েছেন বন বিভাগ।
স্থানীয় দোকান্দার মো. খোরশেদ আলম (৬০) জানান, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত এ স্থানের ৫০-৬০ গজের মধ্যে দোকান্দারী করি। পূর্বশুরীদের মূখে শুনেছি বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে ঔই আম গাছটি রোপণ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, আমগাছের ডাল এভাবে কাটায় খুব কষ্ট পেয়েছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বর্তমান রেঞ্জার মানিক মিয়ার অন্তরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোন প্রকার দরদ নেই। টাকার জন্য তিনি সব করতে পারেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী জানান, বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে রোপনকৃত আম গাছের ডাল কাটার দূর্সাহস বন কর্মকর্তা কোথায় পেলেন? এ ব্যাপারে শীঘ্রই স্থানীয় এমপি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দোখলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মানিক মিয়া জানান, বন বিশ্রামাগারটি সংস্কার করা হবে। ঔই স্থানে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ এবং ফুলের বাগান করা হবে। এই জন্য ডিএফও স্যার শ্রমিকদের গাছের ছোট ছোট ডাল ও পাতা কাটতে বলেছিলেন। কিন্তু ঔই দিন আমি টাঙ্গাইলে থাকায় শ্রমিকরা কিছু কাঠের লোভে পড়ে বড় কয়েকটি ডাল কেটে ফেলেছে।
টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ খান বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে রোপনকৃত আমগাছের বড় বেশ কয়েকটি ডাল কাটার নির্দেশের কথা অস্বীকার করে বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিমা আহমেদ পলি জানান, ঔই স্থানে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য নাকি ছোট কয়েকটি ডাল কাটার কথাছিল। কিন্তু ভুলে শ্রমিকরা বড় ডাল কেটে ফেলেছে। গাছটি মারা যাবে কিনা দেখার জন্য আমি কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠাব। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
⇘সংবাদদাতা: মধুপুর প্রতিনিধি

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।