
শফিকুল ইসলাম,রৌমারী প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীর ভাসমান ডিপো জ্বালানি শূণ্য অস্থায় রয়েছে দীর্ঘ দেড় মাসেরও অধিক সময় ধরে। এর ফলে ডিপো’র ওপর জ্বালানি নির্ভরশীল রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিশাল এলাকা জুড়ে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। এ সুযোগে খুচরা দোকানদার চড়া দামে ডিজেল বিক্রি করছে। জ্বালানি নির্ভর সকল কর্মকান্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম কর্পোরেশন’র (বিপিসি) অধিনে চিলমারী ভাসমান ডিপোতে যমুনা ও মেঘনা ওয়েল কোম্পানী তেল বিক্রি করে থাকে। এ ডিপো ওই তিন উপজেলা ছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিশাল এলাকার ডিজেলের চাহিদা পূরণ করে থাকে। কিন্তু গত ১২ মে থেকে যমুনা ওয়েল কোম্পানীর জ্বালানি শেষ হয়ে যায়। এর ক’দিন পর মেঘনা ওয়েল কোম্পানীতেও ডিজেল শূণ্য হয়ে পড়ে।
জ্বালানি শূণ্য হয়ে যাওয়ার দেড় মাস অতিবাহিত হলেও ওই দুই কোম্পানী চিলমারী ডিপোতে জ্বালানি সরবরাহ করছে না। কি কারনে জ্বালানি শূণ্য হয়ে আছে এর সঠিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি ডিপো ইনচার্জদের কাছ থেকে। কোন দিন নাগাদ তেল আসবে সেটাও বলতে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় জ্বালানি ব্যবসায়িরা হতাশ হয়ে পড়ছে।
রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী উপজেলার জ্বালানি ডিলার অভিযোগ করছেন, যমুনা ও মেঘনা ওয়েল কোম্পানীর ডিপো ইনচার্জদের অবহেলা আর গাফিলতির কারনে জ্বালানি শূণ্যের ঘটনা ঘটেছে। এখন নদীতে পানিও রয়েছে। জ্বালানি ভর্তি জাহাজ চলাচলে কোনো সমস্যা নেই। তারপরও ডিপো ইনচার্জ জ্বালানি আনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। চিলমারী ডিপোতে তেল না থাকার কারনে ব্যবসায়িদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ডিজেল আনতে হচ্ছে পার্বতীপুর ও বাঘাবাড়ি থেকে। আর অতিরিক্ত খরচের বোঝা চাপছে সাধারণ মানুষ ও কৃষকের ঘাড়ে।
রাজীবপুর উপজেলার জ্বালানি পরিবেশক (এজেন্সী) তৈয়ব আলী জানান, চিলমারীতে ডিজেল না থাকার কারনে আমাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে পাবর্তীপুর ও সিরাগঞ্জের বাগাবাড়ি থেকে ডিজেল সংগ্রহ করতে হচ্ছে আমাদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার সৃষ্টি হতে পারে। একই ধরণের কথা জানান, রৌমারীর জ্বালানি পরিবেশক প্রদীপ কুমার সাহা। তিনি বলেন, ‘চিলমারী ডিপো থেকে তেল কিনলে নৌপথে সহজেই পরিবহন করা যায়। কিন্তু চিলমারীতে না থাকলে আমাদের পরিবহন খরচ অনেক বেশি। অতিরিক্ত পরিবহন খরচের কারনে লিটারে ১ টাকা বেশি বেচতে হচ্ছে আমাদের।’
এদিকে স্থানীয় হাটবাজারে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা ৬৫ টাকা লিটারের ডিজেল ৭০ টাকা লিটার বিক্রি করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজীবপুরের এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘চিলমারীতে তেল নেই। একারনে এজেন্সী প্রতিনিধিরাও আমাদের কাছে দাম বেশি নিচ্ছে। আমাদের তো লাভ করতে হবে।’ কর্তিমারী বাজারে কথা হয় খেওয়াচরের কৃষক আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে ৬৫ টাকা লিটার ডিজেল কিনতাম। এখন ৭০ টাকার কমে দেয় দোকানিরা।’ রৌমারী বাজারের এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করছি।’
জ্বালানি শূণ্য প্রসঙ্গে চিলমারী ডিপো’র যমুনা কোম্পানীর ডিপো ইনচার্জ (ডিএস) তফাজ্জল হক বলেন, ‘আমি বার বার তেলের জন্য আবেদন করছি। কিন্তু চট্রগ্রাম থেকে সরবরাহ করতে বিলম্ব করছে।’ একই ধরণের কথা বলেন মেঘনা অয়েল কোম্পানী ডিপো ইনচার্জ (ডিএস) আবু সাঈদ। তিনি বলেন আমাদের কোনো অবহেলা বা গাফিলতি নেই।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।