দেশীয় মডেলিংয়ের পরিচিত নাম সুনেরা বিনতে কামাল

S M Ashraful Azom
0
দেশীয় মডেলিংয়ের পরিচিত নাম সুনেরা বিনতে কামাল
‘ন ডরাই’ সিনেমার নায়িকা সুনেরা বিনতে কামাল
সেবা ডেস্ক: সুনেরা বিনতে কামাল, দেশীয় মডেলিংয়ের পরিচিত নাম। র‌্যাম্প থেকে ২০১১ সালে মডেলিং শুরু করেন। এরপর কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্র ও মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন। শিগগিরই তাকে দেখা মিলবে বড় পর্দায়।

অভিনয় করেছেন সার্ফিং নিয়ে নির্মিত দেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ন ডরাই’-তে। ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’-এর প্রযোজনায় ছবিটি নির্মাণ করেছেন তানিম রহমান অংশু। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাসহ নানা খুঁটিনাটি নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সেই আলাপের চুম্বকাংশ সেবা হট নিউজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

মিডিয়াতে কাজের শুরুটা কীভাবে?

ছোটবেলা থেকেই আমি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শেখা শুরু করি। স্কুলে থাকতে থিয়েটারেও অভিনয় করতাম। সে সময় বিটিভির তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী ছিলাম। সেখান থেকে এক পরিচিতজনের মাধ্যমে র‌্যাম্পে পথচলা শুরু হয়। এরপর দেশের বড় একটি ফ্যাশন হাউজের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করেছি। ফ্যাশন মডেলরা সচরাচর অভিনয় করে না। অনেক আগে থেকেই টেলিভিশন ইন্ড্রাস্ট্রির লোকজন আমার পরিচিত ছিল। সেই সুবাদে মডেলিংয়ের পাশাপাশি আমি টিভিসি করতাম। বছরখানেক আগে প্রীতমের ‘রাজকুমার’ শিরোনামের মিউজিক ভিডিওতেও কাজ করেছি। তার পরেই ‘ন ডরাই’ সিনেমায়। এটি আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।

 ‘ন ডরাই’ সিনেমায় যুক্ত হলেন কিভাবে?

‘রাজকুমার’ গানটির মিউজিক ভিডিওর কাজ করার সময় নির্মাতা তানিম আহমেদ অংশু ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। গানটির মিউজিক ভিডিওটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের লোকজনও আমাকে চিনতেন, তারাই সিনেমাটির জন্য আমার নাম প্রস্তাব করেন। এরপর নির্মাতা-প্রযোজকরা আলোচনা করে আমাকে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মাঝে আমি দুইটা ছবির অফার পেয়েছিলাম কিন্তু না করে দিয়েছিলাম। কারণ আমি একটা ভালো গল্প খুঁজছিলাম। এই ছবির অফার পাওয়ার পর স্ক্রিপ্ট পড়ে দেখলাম আমি এতদিন যার জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেরকম একটি গল্পই পেলাম। এরপর রাজি হয় সিনেমাটিতে কাজ করতে।

‘ন ডরাই’-এ আপনার চরিত্র প্রসঙ্গে জানতে চাই-

এই চলচ্চিত্রে আমার চরিত্রের নাম আয়েশা। এটি প্রথম নারী সার্ফারের চরিত্র। কক্সবাজারের একটি লোকাল ক্যারেক্টার, যে মেয়েটা স্ট্রাগল করে তার স্বপ্ন পূরণের জন্য। এই সমাজে তার স্বপ্ন পূরণ করতে কতটা কষ্টে এগিয়ে যেতে হয়েছে সব বাধা উপেক্ষা করে সেই গল্পই উঠে আসবে। এখানে বলে রাখি, অনেকেই ভাবছেন বাংলাদেশের প্রথম নারী সার্ফার নাসিমার জীবনের গল্পে সিনেমাটি। কিন্তু সিনেমাটি নাসিমার গল্পে নির্মিত হয়নি। নাসিমা সার্ফিংয়ের জন্য যে পরিশ্রম করেছে সেটা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আরেকটা গল্প লেখা হয়েছে। সেই গল্পে নির্মিত হয়েছে ‘ন ডরাই’।

The local model is known as Sunera Binte Kamal

‘ন ডরাই’ এর পোষ্টার

এই সিনেমায় কাজ করতে কোনো বাঁধার সম্মুখিন হতে হয়েছে?

ছবিটি নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় অর্থাৎ চাঁটগাঁইয়া ভাষায়। আমি উত্তর বঙ্গের আর এটা চাঁটগাঁইয়া ভাষা আমার জন্য শুরুতে বেশ কষ্ট হয়েছে। এরপর তিন মাস ভাষা শিখেছি। চট্টগ্রামের মানুষদের চাল-চলন, আচার-ব্যবহার সম্পর্কে জানার জন্য সেখানকার স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে মিশেছি। রেগুলার লাইফেও তখন চট্টগ্রামের বন্ধুদের সঙ্গে বেশি মিশতাম, চাঁটগাইয়া ভাষায় কথা বলতাম। যাতে ঠিকঠাক মতো চরিত্রটিতে তুলে ধরতে পারি। বলতে পারেন ক্যারেক্টারের প্রয়োজনে নিজেকেই চেন্স করে ফেলেছিলাম। সার্ফিং নিয়ে ছবিটির গল্প। আমি সার্ফিং জানতাম না শুধু চরিত্রের প্রযোজনে সার্ফিং শিখতে হয়েছে। সব মিলিয়ে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।


শুটিংয়ের সময়ের এমন কোনো ঘটনা আছে যা সব সময় মনকে নাড়া দেবে?
চলচ্চিত্রটির কাজ করতে সব মিলিয়ে এক বছর সময় লেগেছে। সেখানে অনেক স্মৃতিই জড়িয়ে আছে। একদিন সকালে শুটিংয়ের কারণে পুরো টিম সেন্টমার্টিনে যাই, সেখানে সারাদিন শুটিং শেষ করে ফেরত আসছিলাম সেসময় সমুদ্রের আবহওয়া বেশ খারাপ হয়ে যায়। যার কারণে স্পীড বোর্ডে পানি উঠে যাচ্ছিলো। বড় বড় ঢেউ এসে লাগছিলো। মনে হচ্ছিলো হয়তো এই মহূর্তে আমরা পানিতে ডুবে মরে যাবো। এরপরেও নিজেরা ভয় পেয়ে  হাসাহাসি করে, শক্ত করে বসে বিপদটা কাটিয়ে এসেছি। 



‘ন ডরাই’র ফাস্ট লুক সিনে অনুরাগীদের নজর কেড়েছে, দর্শকমহল থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
প্রথম সিনেমা সেই জায়গায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করেছি। ফাস্ট লুক পোস্টার প্রকাশের পর থেকে সিনেসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। অনেকেই প্রশংসা করছে। আর আমি যেহেতু বুঝে-শুনে স্ক্রিপ্টটা দেখে এগিয়েছি, আমার মনে হয় গল্পটা অবশ্যই সবার ভালো লাগবে। কারণ এটা একটা ভিন্নধর্মী গল্প। বিশেষ করে নারীদের জানা উচিত আয়েশা, যে চরিত্রটা আমি করেছি প্রত্যকটা নারী চলার পথে চরিত্রটাকে কোনো না কোনো সময় অনুভব করেছে। চরিত্রটিতে তারা তাদের নিজেদের দেখতে পাবে।

শুরুতেই গল্প নির্ভর সিনেমায় অভিনয় করলেন, সামনে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে দেখা যাবে?

এখন পর্যন্ত এই বিষয়টি নিয়ে সেভাবে চিন্তা করিনি। যদি কখনো দেখি গল্প ভালো লেগেছে বা প্রজেক্টটা আমার পছন্দ হয়েছে, সে ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল ছবিতেও কাজ করবো।

অভিনয় নিয়ে কী ভাবছেন?

অভিনয় নিয়ে সামনে কী করবো সত্যি কথা বলতে বিষয়টি নিয়ে সেভাবে ভাবা হয়নি। আমি যেহেতু চলচ্চিত্রে একদমই নতুন, আমি মনে করি এই চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে মানুষ আমাকে মন থেকে গ্রহণ করবে। আর এমনো ব্যাপার না যে, করতেই হবে কিছু একটা। কারণ এর বাইরেও আমার অনেক কিছু্ই করার আছে। সেই জায়গা থেকে যদি এই ছবির মতো ভালো স্ক্রিপ্ট পাই তবেই নতুন চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করবো। আর নাটকে অভিনয়ের ইচ্ছে নেই। কিন্তু ভালো গল্পের ওয়েব সিরিজের প্রস্তাব আসে সেটা করতে চাই।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top