করোনা রোধে মির্জাপুরে মাস্ক বিক্রি করছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী

S M Ashraful Azom
0
করোনা রোধে মির্জাপুরে মাস্ক বিক্রি করছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী

সেবা ডেস্ক: মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি, পরনে গেঞ্জি আর থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট, হাতে বাঁশের লাঠিতে ঝুলছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম- মুখের মাস্ক। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দামে মাস্ক বিক্রি করছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সরকারি এস কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিদ্যুৎ ইসলাম।

মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতাল রোডে দেখা মেলে ওই মাস্ক বিক্রেতার। শুধু হাসপাতাল রোডে নয়, করোনায় মাস্কের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়েও মাস্ক বিক্রি করে সংসার চালায় বিদ্যুৎ।

মাস্ক কিনতে গিয়েই দেখা বিদ্যুতের সঙ্গে। তুমি পড়াশোনা করো না? আমার প্রশ্নের সহজ উত্তর, ‘অহন তো স্কুল বন্ধ, শুনছি এই বছর আর পড়ালেখা হইবো না। তাই বইয়্যা থাইক্যা কী লাভ? অহন মাস্ক বেচি।’

মা-বাবাসহ দুই ভাই ও এক বোন নিয়ে বিদ্যুতের ছয় সদস্যের পরিবার। ছোট থেকেই মির্জাপুরে নানা বাড়ি থেকে চলে পড়াশোনা। বাবা-মা ও ভাই-বোনেরাও থাকে নানা বাড়িতেই। তার দুই ভাই যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে স্থানীয় স্কুলে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে বোন। বাবার আয়ে চলতো পরিবার। কিন্তু মহামারি করোনায় কাজ হারিয়েছেন তিনি। আয় না থাকলেও খরচ বেড়েছে।

সংসার চালাতে তাই কাজে নামে বিদ্যুৎ। মাস্কের পাইকারি বিক্রেতা মামা ওয়াহেদুলের কাছ থেকে মাস্ক নিয়ে শুরু করে বিক্রি। ১ হাজার ৬০০ টাকা নিয়ে মাস্ক বিক্রি শুরু করে বিদ্যুৎ। চারদিকে যখন করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয়, তখন পেটের দায়ে মাস্ক বিক্রিতে নামা ছেলেকে বাঁধা দেননি মা-বাবা। প্রথমবার ৩ হাজার টাকা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করে ওই ‍স্কুল শিক্ষার্থী।

‘প্রথম দিকে পুলিশ এবং আর্মি কড়া টহল দিত। আর মাস্ক বিক্রি করতে দেখলে মা-বাবা নিয়া গালি দিত। খুব খারাপ লাগত। এখনো অনেকে খারাপ ব্যবহার করে’, জানায় বিদ্যুৎ।

মাস্ক বিক্রি করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় অনেকের দুর্ব্যবহার সহ্য করতে হয়েছে তার। আক্ষেপের সুরে বিদ্যুৎ আরও জানায়, ‘পেটের জন্যই তো আহি। হুদাই ধমক দিয়া তাড়িয়ে দেয়। দোকানের সামনে দাঁড়ালে দোকানদার গালি দেয়।’

‘প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বিক্রি করি। ভালো লাভ থাকে। তবে আমি টাকা নেই না। মার কাছে নিয়্যা দেই। গত ঈদে আমার টাকায় ছোট ভাই-বোনরে নতুন জামা কাপড় কি-না দিছি। ওরা তো ছোট। বোঝে না’, বলে বিদ্যুৎ।

অনলাইনে ক্লাস করছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ বলে, ‘আমার তো স্মার্টফোন নাই। তাই অনলাইনে ক্লাস করতে পারি না। তবে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পড়তে বসি। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা আমার। এখন প্রাইভেট পড়া বন্ধ। স্কুলরে অনেক মিস করি আর বন্ধুদেরও।’

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top