
শফিকুল ইসলাম: একই পরিবারের তিন বোনকে থুথু খাওয়ানোর ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ হলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। ঘটনাটি গত ১৫ আগস্ট (শনিবার) কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ছাটকড়াই বাড়ী গ্রামে।
নির্যাতিত ওই পরিবারের সাথে কথা বলে জানাযায়, বিচারের নামে তিন বোনকে প্রকাশ্যে জোড় করে থুথু খাওয়ানোর ঘটনায় গ্রামের প্রভাবশালীদের ভয়ে লজ্জায় তারা বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন। তিন বোনের মধ্যে বড় বোন বিবাহীত, মেজোটা (১৬) ও ছোট বোন (১২) বছর।
নির্যাতিত ওই পরিবারের অভিযোগ গত ১৪ আগস্ট (শুক্রবার) সন্ধার দিকে পাড়ের চর গ্রামের খোকা ও রাকিব নামের দুই ছেলে ছাটকড়াই বাড়ি গ্রামে খালার বাড়ীতে বেড়াতে আসে এবং সেই সুবাধে ছেলে দুটি নির্যাতিত অসহায় ওই দিনমজুরের বাড়ীতে আসেন। এসময় একটি কুচক্রিমহল দুই ছেলেকে আটক করে। পরে অবৈধ কাজে ওই বাড়িতে এসেছে এই অপবাদ দিয়ে ছেলে দুটির পরিবারের কাছে ১৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। ভোর রাতে ছেলে দুটির অভিভাবক টাকা নিয়ে আসলে নির্যাতিত ওই পরিবারকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ১৩ হাজার টাকা ইনতাজল ,জহরুল হক ,মনিরুজ্জামান,মোকছেদ আলী,আজাহার আলী,নজির মাষ্টার,শাহজাহান ও দাঁতভাঙ্গা ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বন্টন করে নেয়।
এতেও ক্ষান্ত হয়নি ওই মাতাব্বরগণ। পরের দিন ১৫ আগস্ট (শনিবার) সকাল ১০টায় জহরুল ইসলামের বাড়ির আঙ্গিনায় সালিশী বৈঠক বসে। ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, দাঁতভাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, মাতাব্বর আজাহার আলী , মোকছেদ আলীর নেতৃতে উক্ত সালিশে গ্রামবাসির সামনে প্রকাশ্যে অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে ওই ৩ বোনকে জোর করে থুথু খেতে বাধ্য করায়। মুহুর্তের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছাড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড়া সৃষ্টি হয়।
নির্যাতিত ওই তিন বোনের ছোট বোন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমার আব্বার কিছু দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। আমাদের উপর অবিচার করা হয়েছে। আমার মাকেও থুথু খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয় এবং আমিও কোন ভাবে থুথু খাচ্ছিলাম না তখন ইনতাজুলের ছেলে গোলজার আমার মাথা ঠেসে ধরে জোর করে থুথু খেতে বাধ্য করে। আমরা লজ্জায় অপমানে, মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি । আমরা এই অপমানের বিচার চাই।
দাঁতভাঙ্গা ইউ পি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, যদিও আমি সালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম তথাপি থুথু খাওনোর ব্যাপারে গ্রাম্যমাতাব্বরদের বাধা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেনি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ আবু মো. দিলওয়ার হাসান ইনাম জানান, এব্যাপারে একটি সাধারণ ডাইরী জিডি) হয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রæত আাইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।