৫ বছর সংসার করার পর স্ত্রীর স্বীকৃতি মেলেনি তার

Seba Hot News
0
৫ বছর সংসার করার পর স্ত্রীর স্বীকৃতি মেলেনি তার



কাজিপুর প্রতিনিধি: পাঁচ বছর পূর্বে তারা বগুড়ায় অবস্থান করে পড়াশুনা করছিলেন নিলুফা আর শাকিল। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর শুধু মৌলভী ডেকে কলেমা পড়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে বাসাভাড়া নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছর স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ঘর-সংসারও করেন তারা।

সম্প্রতি একটি চাকরি পেয়ে ঢাকায় চলে গিয়ে ওই যুবতীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন শাকিল।  বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নিলুফা শাহ্ সুলতান শাকিলের বাড়ির সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের বরশীভাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন । 

শাকিল এই গ্রামের জহুরুল ইসলামের পুত্র। শ্বশুর বাড়িতে এসে নির্যাতন-জুলুমের শিকার হন নিলুফা। রবিবার দুপুরে বরশীভাঙ্গা গ্রামে নিলুফার সাথে দেখা করলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানান।

জানা গেছে, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বেলভুজা গ্রামের নজুরুল ইসলামের মেয়ে নিলুফা এবং শাকিল দুজনেই পরিবারকে না জেনে বিয়ে করেন। শাকিলের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে নিলুফা শ্বশুর বাড়িতে আসলে কেউই তাকে মেনে নেয়নি।  

তাদের দাবী ছেলেতো এখনো বিয়েই করেনি। এক পর্যায়ে নিলুফার  শাশুড়ি, ননদ মিলে মেয়েটিকে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। ঘটনা জানাজানি হলে গ্রাম্য সালিশ বসে। সেখানে বিয়ের ঘটনার সত্যতা পেয়ে ছেলের পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়।  গত ২২ জুলাই মাকিল-নিলুফার নতুন করে  বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এরপর মেয়েটি স্বামীর সাথে শ্বশুর বাড়িতেই ছিলেন। 

এরই মধ্যে অসুস্থ বাবাকে দেখতে শ্বশুরের অনুমতি নিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বেলভুজায় পিতার বাড়িতে  চলে যান নিলুফা। এক সপ্তাহ সেখানে থাকার পর আবারো শাকিল নিলুফার ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেয়।এরই  এক পর্যায়ে গত ৬ আগস্ট শাকিল নিলুফার ঠিকানায় ডাকযোগে তালাকের কাগজ পাঠান। কাগজ পেয়ে নিরুপায় নিলুফা আবারও কাজিপুরে স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু এবারও স্বামীর পরিবার তাকে মেনে না নিয়ে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেন। পরে মেয়েটি আবার বাবার বাড়ি চলে যান। কয়েকদিনের ব্যবধানে ডাকযোগে দ্বিতীয় তালাকনামা পাঠান শাকিল। এদিকে অস্থির হয়ে নিলুফা পুনরায় স্বামীর বাড়ি এসে  শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হন।  অবস্থা বেগতিক দেখে শাকিলে চাচা শফিকুল ইসলাম নিলুফাকে তার বাড়িতে রাখেন।গত দুই সপ্তাহ যাবৎ মেয়েটি তার বাড়িতেই অবস্থান করছেন।  এরইমধ্যে

গ্রাম্য মাতব্বরগণ আবারো সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করেন।  এক পর্যায়ে মাতব্বরগণ  বিষয়টি মীমাংসার জন্য মেয়েটিকে নিয়ে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট যান। তিনি বিষয়টির সুরাহার জন্যে উভয়পক্ষকে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেন।কিন্তু শাকিলের পরিবার কিছুতেই নিলুফাকে মেনে নিচ্ছে না। 

ভুক্তভোগী  নিলুফা  জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই আমার সাথে এমনটা করেছে৷ তারা মাত্র  ৫০ হাজার টাকা মোহরানা দিয়ে কাবিন নামায় আমাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছে। কয়েকদিন না যেতেই আমার নামে তালাকের কাগজ পাঠিয়েছে। এবার স্ত্রীর মর্যাদা না পাওয়া অবধি জীবন গেলেও আমি এখান থেকে নড়চড় করবো না। 

ছেলের চাচা শফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটা অনেক ভালো। বিষয়টা মীমাংসা করতে আমরা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। আমার ভাতিজা ও ভাইকেও অনেক বুঝাচ্ছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। আমিও খুব চিন্তায় আছি মেয়েটি যে কোন সময় একটা অঘটন ঘটাতে পারে।

এ বিষয়ে  কথা বলতে শাহ্ সুলতান শাকিলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি  কথা বলতে রাজি হননি। সাংবাদিক পরিচয় পাবার পরেই অফিসের কাজে ব্যস্ততা দেখিয়ে সংযোগটি কেটে দেন। 

এদিকে কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ পঞ্চনন্দ সরকার জানান, এমন ঘটনার বিষয়ে জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্তমকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, মানবিক দিক বিবেচনা করে  ওই পরিবারটিকে বিষয়টি মীমাংসা করতে বলা হয়েছে।

 


শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top