সেবা ডেস্ক: আফগানিস্তানের কুনার ও নানগারহারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৮০০ জনের বেশি নিহত। বিস্তারিত জানুন এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং চলমান উদ্ধারকাজ সম্পর্কে।
![]() |
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়াল, উদ্ধারকাজ ব্যাহত |
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অঞ্চল কুনার এবং নানগারহারে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৮০০ জনে পৌঁছেছে। পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এই অঞ্চলগুলোতে ভূমিধস এবং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতি আকাশপথে সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছে তালেবান সরকার।
ভয়াবহতার চিত্র: কুনার ও নানগারহার প্রদেশের ক্ষয়ক্ষতি
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুফতি আবদুল মাতিন নিশ্চিত করেছেন যে, ভূমিকম্পে কুনার এবং নানগারহার প্রদেশে ৮০০ জন নিহত হয়েছেন। এই দুই প্রদেশে আহতের সংখ্যাও ব্যাপক—কুনারে ১৩০০ জনের বেশি এবং নানগারহারে ২৫৫ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। অসংখ্য বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ায় শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন:
ভূমিকম্পের ভয়াবহতা তুলে ধরে স্থানীয় বাসিন্দা পোলাদ নূরি বিবিসিকে বলেন, “এমন শক্তিশালী ভূমিকম্প আমি আমার জীবনে আগে কখনো দেখিনি।” স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু একটি গ্রামেই ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
ভূমিকম্পের মাত্রা ও উৎপত্তিস্থল
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস (USGS) এর তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। মূল কম্পনের পর নানগারহার ও কুনার প্রদেশে অন্তত ১৩টি পরাঘাত (Aftershock) অনুভূত হয়েছে, যা উদ্ধারকারী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা
ভূমিকম্পের পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু হলেও দুর্গম পার্বত্য এলাকায় অনেক জায়গায় ভূমিধস হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে ভারী যন্ত্রপাতি ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিধসের কারণে অসংখ্য রাস্তা সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ হয়ে আছে, যা উদ্ধারকাজকে জটিল করে তুলেছে। তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে হেলিকপ্টার বা আকাশপথে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে দ্রুত দুর্গতদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়। মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।