রকিবুল হাসান: দেশের খুচরা বাজারে সবজির দাম ঊর্ধ্বগামী। কাঁচা মরিচ, বেগুন, করলা, পটল, বরবটি, শশা, লাউ, ঢেঁড়শ, কচুর লতি, কাঁচা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়াসহ প্রায় সব সবজির দাম দ্বিগুণ বা তারও বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে মৌসুম না হলেও কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
![]() |
| বকশীগঞ্জে সবজির দাম আকাশচুম্বী, আগাম চাষে ঝুঁকছেন কৃষক |
জামালপুরের বকশীগঞ্জের বাজারে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচের দাম কেজি প্রতি ১৮০-২০০ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৮০-১০০ টাকা। করলা ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ১০০-১২০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, বরবটি ৪০-৬০ টাকা এবং লাউ প্রতিটি ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
ভোক্তারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বকশীগঞ্জ বাজারের এক ক্রেতা বলেন, “দুই হাজার টাকায় সপ্তাহের বাজার করা যাচ্ছে না। সবজির দাম যেন সোনার চেয়ে বেশি।”
দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী ও কৃষিবিশ্লেষকরা অতিবৃষ্টি, জলাবদ্ধতা, ফসল নষ্ট এবং সরবরাহ চেইনের দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছেন। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে অতিবৃষ্টিতে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে।
খুচরা বিক্রেতা আজিম মিয়া বলেন, “বৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হচ্ছে, ফলে বাজারে সবজির সংকট। এ কারণে দাম বেড়েছে।” তবে কৃষক সোলাইমান মিয়া জানান, “বাজারে সবজির সংকট নেই। পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে কম দামে কিনে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে। কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না, মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছে।”
ভোক্তারা বলছেন, সবজির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এক সপ্তাহের বাজার ১,৫০০ টাকায়ও সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি সিন্ডিকেট, মজুতদারদের কারসাজি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
এদিকে, কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন। বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুরে ফুলকপি, শিম, গাজর, মুলা, লাউ, পাটশাক, পুইশাক, লালশাক, পালংশাক ইত্যাদি চাষ শুরু হয়েছে। কেউ কেউ চারা রোপণও করেছেন।
শেখপাড়ার কৃষক খোরশেদ মিয়া বলেন, “গত বছর আগাম চাষে লাভ হয়েছিল। এবারও ভরসা করছি। তবে সার ও বীজের দাম বেড়েছে, বৃষ্টিতে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ বা সহযোগিতা পাচ্ছি না।”
কৃষি বিভাগ সতর্ক করে জানিয়েছে, আগাম চাষে ঝুঁকি বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ফসল নষ্ট হতে পারে। তবে বকশীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, “এ বছর ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কৃষকদের বীজ বিতরণ ও মাঠপর্যায়ে সহায়তা অব্যাহত আছে। আশা করি, শিগগিরই সবজির দাম কমবে।”
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাজার মনিটরিং জোরদার, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।
সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন
বকশীগঞ্জ- নিয়ে আরও পড়ুন

বকশীগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর কমিটি গঠন

বকশীগঞ্জে বিজিবির অভিযানে ৯৩ পিস ইয়াবাসহ পাগলা হযরত আটক

বকশীগঞ্জে তাঁতীলীগের নেতা রিয়াদ গ্রেফতার

বকশীগঞ্জে ৩০ ইয়াবা বড়িসহ যুবক আটক

বকশীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা করে মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনতাই, দুই পুলিশ আহত, আটক-৪


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।