শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের মদনপাড়া গ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে চার গ্রামের প্রায় এক হাজার মানুষ।
![]() |
| ঝুকিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা: রাজিবপুরে ব্রীজ না থাকায় বাঁশের সাঁকোয় পারাপার |
এলাকার একমাত্র সংযোগ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে একটি অস্থায়ী বাঁশের সেতু তৈরি করে পারাপার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে মদনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মদনপাড়া, মোহনগঞ্জ, মধ্য মদন পাড়া ও দক্ষিণপাড়ার লোকজন এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন হাট-বাজার, স্কুল, কলেজসহ নিত্য প্রয়োজনে চলাফেরা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ও কালভার্টটি ভেঙে যায়। ফলে চলাচলের একমাত্র ভরসা এখন একটি বাঁশের সেতু। বর্ষা মৌসুমে এই পথ আরো বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। একটু অসতর্ক হলেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। রাস্তার মাঝে বেশি গভীর হওয়ায়, রাস্তার এক পাশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সাঁকোটি।
মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, আমরা নিজেরাও কয়েকদিন আগে ঐ বাঁশের সেতু দিয়ে পার হয়েছি। সত্যি বলতে কি, সাঁকোটি মরণ ফাদঁ। দেখেছি ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্কুলে যেতে কতটা ঝুঁকি নেয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই-অতি দ্রæত এই রাস্তাটি সংস্কার করে জনগণের জন্য নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক।
সুরুজ্জামাল, জিয়া, এমদাদুল সহ কয়েকজন অভিযোগ কওে বলেন, আমরা বারবার ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জানিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না, অসুস্থ রোগীকে নেওয়াসহ নিত্য দিনের সমস্যা এটি।
মদনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহামম্মদ আলী জিন্নাহ ও আয়নাল হক বলেন, ‘রাস্তার এই দুরবস্থার কারণে আমাদের স্কুলের উপস্থিতির হার অনেক কমে গেছে। অভিভাবকেরা শিশুদের ঝুঁকি নিয়ে পাঠাতে ভয় পান। বিশেষ করে বর্ষা এলে সেতুটি পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, তখন অনেক সময় স্কুলে আসা-যাওয়াই বন্ধ হয়ে যায়। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, দ্রুত রান্তাটিতে উন্নয়নমূলক কাজ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে স্কুলে আসার সুযোগ নিশ্চিত করা হোক।
এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ বলেন, এই রাস্তা আমাদের জীবনের অংশ। প্রতিদিন কত মানুষ এখানে পড়ে যায়, কেউ আহত হয়-কিন্তু তবুও কেউ দেখার নেই। আমরা শুধু চাই, সরকার ও স্থানীয় প্র্রশাসন দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করুক। যেন আমাদের সন্তানরা নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে।
স্থানীয়দের মতে, মদনপাড়ার এই বাঁশের সেতুটি যেন এখন এলাকার মানুষের দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও উন্নয়নের অভাবে গ্রামের মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে। তারা আশা করছেন-প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে এই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে, নিরাপদ পথে ফিরবে মদনপাড়ার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণই এখন মদনপাড়াবাসীর একমাত্র দাবি।
রাজিবপুর উপজেলা প্রকৌশলী সৌরভ কুমার সাহা বলেন, সরেজমিনে দেখে কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী জানান, ওই স্থানে একটি ব্রীজের খুবই প্রয়োজন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে।
সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন
রাজিবপুর- নিয়ে আরও পড়ুন

রাজিবপুরে ৫শ’ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারি আটক

রাজিবপুরে জমি সংক্রান্ত জেরে দু’গ্রুপে সংঘর্ষ আহত-১৫

রাজিবপুরের শিবেরডাঙ্গী বাজারে অগ্নিকান্ডে ১১ দোকান ভষ্মিভূত


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।