গ্রহের সন্ধানে নাসার নতুন মিশন কিন্তু কিভাবে খুঁজবে এই গ্রহ

Seba Hot News
গ্রহের সন্ধানে নাসার নতুন মিশন  কিন্তু কিভাবে খুঁজবে এই গ্রহ সেবা ডেস্ক: - সোমবার রাতে মহাকাশে শুরু হচ্ছে নাসার নতুন এক অভিযান। এই মিশনকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞানীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। এই মিশনে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা দুই লাখের মতো নক্ষত্রের উপর নজর রাখবেন।

 তাদের উদ্দেশ্য হলো আমাদের সৌরজগতের বাইরে আরো যেসব গ্রহ আছে সেগুলো আবিষ্কার করা। এই লক্ষ্যে নাসা এবার মহাকাশে যে উপগ্রহটি পাঠাচ্ছে তার নাম টেস বা ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট। 

 আমাদের এই পৃথিবীর সমান গ্রহ থেকে শুরু করে গ্যাসের তৈরি বৃহদাকার কোন গ্রহ- - মহাকাশে এরকম যা কিছু আছে তার সবকিছুর উপরেই অনুসন্ধান চালাবে এই টেস স্যাটেলাইট।
নাসা বলছে, "আমাদের সৌরজগতের বাইরে আরো যেসব গ্রহ আছে সেগুলোর সন্ধানে এই টেসা হচ্ছে তার পরবর্তী ধাপ।"

কিন্তু কিভাবে খুঁজবে এই গ্রহ? বিজ্ঞানীরা বলছেন, টেসা দেখবে নক্ষত্রগুলো কতোটা উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছে, সেগুলোর উজ্জ্বলতায় যদি কম বেশি হয় তাহলে সেখান থেকে হয়তো কোন গ্রহের উপস্থিতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে। কারণ এই নক্ষত্রের চারপাশ দিয়ে যখন কোন গ্রহ ঘুরতে থাকে তখন তার উজ্জ্বলতা কমবেশি হয়ে থাকতে পারে।

যখন কোন গ্রহ এরকম কিছু করে তাকে বলা হয় ট্রানজিট। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, টেস স্যাটেলাইট হয়তো এরকম কিছু ঘটনাকে সনাক্ত করতে পারবে।  এই স্যাটেলাইটটি যখন এরকম কিছু ট্রানজিটের ঘটনা চিহ্নিত করতে পারবে, তখন সেখানে আসলেই কোন গ্রহ আছে কিনা, বা কেন সেখানে এরকম কিছু ঘটলো সেটার বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা শুরু করবে। দেখার চেষ্টা করবে নক্ষত্রকে ঘিরে ঘুরছে যেসব গ্রহ সেগুলোতে জীবনের কোন অস্তিত্ব আছে কিনা, কিম্বা প্রাণের বেঁচে থাকার মতো পরিবেশন সেখানে বিরাজ করছে কিনা।

গ্রহের সন্ধানে নাসার নতুন মিশন  কিন্তু কিভাবে খুঁজবে এই গ্রহ কিভাবে করা হবে?

টেস স্যাটেলাইট আগামী দু'বছর ধরে পুরো আকাশে জরিপ চালাবে। আর এই কাজটি করা হবে আকাশকে ২৬টি ভাগে ভাগ করে। এতো বড়ো আকাশে কি চোখ রাখা সম্ভব? সম্ভব নয় বলেই ২৬টি ভাগে ভাগ করে একসময় শুধু একটি অংশের উপরেই জরিপটি চালানো হবে।
স্যাটেলাইটে থাকবে বহু ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা নজর রাখবে আকাশের উপর। ২৬টি ভাগের একেকটি অংশে নজর রাখা হবে কমপক্ষে ২৭ দিন।

ক্যামেরা দিয়ে দেখার চেষ্টা করা হবে সেখানে নক্ষত্রের উজ্জ্বলতায় কোন পরিবর্তন ঘটে কিনা। হলে সেটা কতো বার হয়- এসব থেকে বিজ্ঞানীরা ধারণা করতে পারবেন যে ওই নক্ষত্রকে ঘিরে আসলেই কোন গ্রহ ঘুরে বেড়াচ্ছে কিনা। এই টেস উপগ্রহটি যেসব নক্ষত্রের উপর নজর রাখবে সেগুলো আমাদের এই পৃথিবী থেকে ৩০০ আলোক বর্ষ দূরে। 
"আমরা একেকটি গ্রহ সম্পর্কে পরীক্ষা চালাতে পারবো। বিভিন্ন গ্রহের মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য আছে সেসব বিষয়েও কথা বলতে পারবো। টেস অনুসন্ধান করে যেসব বের করতে পারবে সেগুলো হবে ভবিষ্যতের জন্যে দারুণ কিছু বিষয়," বলছেন বিজ্ঞানী স্টিফেন রাইনহার্ট, যিনি এই প্রকল্পে কাজ করছেন।
"এক্সোপ্ল্যানেট অনুসন্ধানে এটি নতুন এক যুগের সূচনা করবে," বলেন তিনি।

এখন কী হচ্ছে?

নাসাকে এখন এই টেস মহাকাশ যানটিকে মহাকাশে পাঠাতে হবে। সোমবার রাতে ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে এই স্যাটেলাইটটিকে। চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তির সহযোগিতায় এটি ঘুরে বেড়াবে পৃথিবীর চারপাশে।

এভাবে চলবে প্রথম ৬০ দিন। বিজ্ঞানীরা যখন এর কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট হবেন, দেখবেন এটি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে তখন এটি সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলোর দিকে তাকাতে শুরু করবে আর সেটা চলবে আরো প্রায় দুই বছর।
টেসের জন্যে রইলো শুভ কামনা!

সূত্র বিবিসি বাংলা


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top