শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ১০ নং চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী তার ইউনিয়নের আওতাধীন পূর্ব চাম্বল হিন্দুপাড়া সড়কের ডোনারজাল রাস্তা দু পাশে দীর্ঘদিনের গড়ে উঠা উপকূলীয় রেঞ্জের অধিনে পরিচর্যাকৃত সহস্রাধিক গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। তা ছাড়া সরকারী ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে জনৈক ব্যক্তিকে বসতঘরের চলাচলের রাস্তা করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মে সোমবার দুপুরে পূর্ব চাম্বল ওই সড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০-৩০ জন শ্রমিক অবৈধভাবে গাছ কর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছে। তা ছাড়া সড়কের উপরেই কর্তনকৃত গাছের স্তুপ রেখে জনচলাচলে বৃঘ্ন সৃষ্টি করেছে। এদিকে উপকূলীয় রেঞ্জের অধিনে সরকারি গাছ কর্তনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা'র কাছে জানতে চাইলে গাছ কর্তনের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখার ও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও তিনি জানান।
দীর্ঘদিন থেকে চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে সরকারী গাছ কর্তনসহ নানা অভিযোগ থাকলেও সরকারী দলের নেতা হওয়ার কারণে তার বিরোদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ করেও সুফল পায়না সাধারণ মানুষ। তাছাড়া তার নিজ দলের লোকদের মাঝে তার অপকর্মের কারণে অসন্তুষ্ট দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যানের এই অপকর্মের বিরোদ্ধে প্রশাসনের উর্ধতন কতৃপক্ষের আসু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের অধিনে বাঁশখালী উপজেলা উপকূলীয় রেঞ্জের আওতাধিন ১০ চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল হিন্দুপাড়া সড়ক (ডোনারজাল) রাস্তার দু-পাশে সৃজিত বাগানের সহস্রাধিক গাছ কর্তনের মহোৎসব চলছে। গাছ কর্তনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১০ নং চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী। তাছাড়া ওই সড়কের দুপাশে সৃজিত গাছ গুলো কর্তনে ২০-৩০ জন শ্রমিক গত দু-তিন দিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছে। ওই সড়কের পাশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে গাছ গুলো কর্তন করে নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ওই চেয়ারম্যান খাস জায়গার নাম দিয়ে ব্যক্তিবর্গের জায়গা দখলেরও পায়তারা করে যাচ্ছে। চেয়ারম্যানের অপকর্মের বিরোদ্ধে মুখ খুললে প্রাণ নাশের ভয় আছে বিধায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা অলিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গাছ কর্তনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গন্ডামারা বিট কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জব্দকৃত গাছের তালিকা উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
গাছ কর্তনের বিষয়ে চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, সকল বিষয়ের হিসেব সাংবাদিকদের দিতে নাই! সড়ক নির্মানের জন্য গাছ গুলো কাটা হচ্ছে। তবে উপকূলীয় রেঞ্জের অধিনের গাছ গুলো চেয়ারম্যান কীভাবে কাটছে তা জানতে চাইলে তিনি কোন ধরণের সদুত্তোর দিতে পারেনি।