রুহুল কবির রিজভীর হঠাৎ নীরবতা পালন করার নেপথ্যে

S M Ashraful Azom
রুহুল কবির রিজভীর হঠাৎ নীরবতা পালন করার নেপথ্যে

সেবা ডেস্ক: ২০১৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সর্বশেষ দলীয় কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের মহাসিচব এবং রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব হিসেবে মনোনীত করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতিতে খালেদা এবং তারেকের পর সাংগঠনিক দিক দিয়ে তারা দু’জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছিলেন।

দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন ইস্যুতে ফখরুলের সাথে তারেক রহমানের মতবিরোধের জের ধরে গত এক বছর ধরে ফখরুলকে কিছুটা নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে খালেদা এবং তারেক রহমানের পরামর্শে। ফখরুলকে নিষ্ক্রিয় করার পর থেকে দলের সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রিজভী অলিখিত ভাবে দলের ‘মহাসচিব’ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনসহ রাজপথের আন্দোলনেও নিয়মিত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে তারেকের পছন্দেই মূলত রিজভী খালেদা এবং তারেকের অনুপস্থিতিতে বিএনপির প্রধান নেতৃত্ব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

সম্প্রতি বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব আসার গুঞ্জন শুরু হলে হঠাৎ করেই নীরব হয়ে যান রিজভী। গত দুই সপ্তাহ যাবত বিএনপির সংবাদ সম্মেলনসহ দলের বিভিন্ন নিয়মিত কার্যক্রমেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার বরাত দিয়ে জানা গেছে গত ২৩মে দলের নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে গোপন বৈঠক করেন তারেক। বৈঠক চলাকালীন সময়ে তারেক ফখরুল এবং রিজভীকে আন্দোলনে দলের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেন। এমনকি এই দুজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে আঁতাত করারও অভিযোগ করেন তারেক। এসময় ফখরুল অভিমান করে চুপ করে থাকলেও রিজভী তারেকের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদের এক পর্যায়ে তারেকের সাথে কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয় রিজভীর।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে এসময় রিজভী অভিমানের সুরে বলেন, আমরা দলের জন্য এবং ম্যাডামের মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলনের চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আপনার সাথে ও ম্যাডামের সাথে নিয়মিত যোগাযোগও করে যাচ্ছি, অথচ আপনি আপনার আশেপাশের কিছু চাটুকার নেতা কর্মীর কথা শুনে আমাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘতকতার অভিযোগ তুলেছেন। তারেক এসময় প্রতিউত্তরে জানান তিনি সুনির্দিষ্ট তথ্যের উপর ভিত্তি করেই উক্ত অভিযোগ করেছেন। তারেকের এই উত্তর শোনার পর রিজভী একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে থাকেন। তারপর বৈঠকে উপস্থিত অন্য সিনিয়র নেতাদের সাথে নতুন নেতৃত্ব আনার বিষয়ে পরামর্শ করেন তারেক। তারেকের সাথে মতবিরোধের পর বৈঠকের বাকিটা সময় নীরব থাকনে রিজভী এবং ফখরুল।

তারেকের সাথে ঐ গোপন বৈঠকের পর থেকেই মূলত রিজভী দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন। দলীয় বিভিন্ন ইফতার প্রোগ্রামে রিজভীকে দাওয়াত দেওয়া সত্বেও তিনি অংশগ্রহণ করেননি।

রিজভীর এক ঘনিষ্ঠ আত্নীয়ের সাথে কথা বলে জানা যায় সেদিনের বৈঠকে রিজভীর প্রতি তারেকের আচরণের পর থেকে অনেকটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এক সময়ের তুখোড় ছাত্রদল নেতা রিজভী।


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top