
রকি চন্দ্র সাহা, চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ডে ভাসুরের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত প্রবাসীর স্ত্রী গতকাল রাত ৪ ঘটিকা সময় নিহত হয় । ঘটনাটি গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পিবার রাত ২ টায় উপজেলার পৌর ১১ নং ওয়ার্ডের ভাটনীখোলা বেপারী বাড়িতে ঘটে।
এই বাড়ির আবদুল খালেকের পুত্র জহিরুল ইসলাম ও সালামত উল্লার পুত্র আরিফুল ইসলাম পরস্পর চাচাত ভাই। আরিফ সৌদী প্রবাসী ও তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম। সম্পর্কে জহির কোহিনুরের ভাসুর। তাদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। ওই শত্রুতার জের ধরেই জহির তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কোহিনুরকে ছুরিকাঘাত করে আহত করেছে।
আরও পড়ুন> প্রবাসীর স্ত্রী ভাসুরের ছুরিকাঘাতে আহত
আহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, জহির বরাবরই বখাটে। তার স্ত্রী লাকি আক্তার তাকে ধারদেনা করে দু'বার প্রবাসে পাঠায়। শেষ বার প্রবাস থেকে ফিরে আসলে স্ত্রীর পূর্ব ঘোষনার আলোকে লাকি জহিরকে তালাক দেয়। এর প্রায় ১ বছর পর তালাককৃত লাকিকে আরিফের স্ত্রী কোহিনুর তার নিজ ভাই সালে আহম্মদের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহির কোহিনুরের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বসত ঘরের পিছন দিয়ে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এঘটনাটি ঘটায়।
কোহিনুরের দেবর হাবীব বলেন, জহিরের স্ত্রী লাকির সাথে তালাক হওয়ার পর সে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যায়। মাঝেমধ্যে সে এলাকায় আসতো এবং ভাবীর সাথে খারাপ আচরনসহ হুমকি-ধমকি প্রদান করতো। ঘটনার রাতে ভাতিজা তারেক ও ভাতিজি মুক্তার ডাক চিৎকারে আমরা ঘুম থেকে উঠে আসি। এসময় ঘাতক জহির পালিয়ে যায়। ঘরে ঢুকে ভাবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাটে পড়ে থাকতে দেখি। খবর পেলে শাহরাস্তি মডেল থানার এসআই হাবিবুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি ভয়াবহ দেখে তাকে চিকিৎসার পরামর্শ প্রদান করেন। আমরা প্রথমে উয়ারুক মেডিল্যাব হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখলে তারা কুমিল্লা সরকারী মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।। সেখান থেকে বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা মৃত্যু হয় বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় ভাবীর চিৎকারে ভাতিজি মুক্তা এগিয়ে গেলে জহির তাকেও ছুরিকাঘাত করে। মা ও মেয়েকে আহত করার পর বাড়ি করার ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা আর ভাবীর একটি মোবাইলে নিয়ে যায় সে। এ ব্যাপারে আইনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আহত কোহিনুরের মেয়ে মুক্তা বলে, মায়ের চিৎকার শুনে আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি জহির জেঠার হাতে বড় একটি ছুরি। ওই ছুরি দিয়ে মাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করছে। আমি দৌঁড়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমাকেও তিনি ছুরি দিয়ে আঘাত করেন।এতে আমিও গুরুতর আহত হই। এধরনের ঘটনাকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানায় সে।
ঘাতক জহিরের পিতা আঃ খালেক বলেন, আমি নিরুপায় অসহায়। আমার পুত্র জহির অবাধ্য। সে আমাকে ও আমার ছোট পুত্রকে কয়েক মাস পুর্বে কুপিয় রক্তাক্ত জখম করেছে। পালিয়ে বেড়ানোর কারনে তাকে আইনের আওতায় আনতে পারিনি। যা আমি পিতা হিসেবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। বর্তমান ঘটনায় কুলাঙ্গার পুত্র জহিরের ফাঁসি দাবি করেন তিনি।
কোহিনুরের দেবর শরীফের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি শংকিত কন্ঠে বলেন, আজ রাত ৪ গটিকায় সময় কোহিনুরের মৃত্যু হয়।
এলাকাবাসী বলেন, জহির দীর্ঘদিন যাবত বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করছে। পারিবারিক ভাবে কোনো বাধা না থাকায় সে তার ইচ্ছে মত যার তার সাথে এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। এমন বেপরোয়া হওয়ার পিছনে তার অন্যান্য ভাইদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। তাদের ইন্ধনেই আজ জহির এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আরিফের স্ত্রী কোহিনুরের শারীরিক যে অবস্থা তা নিয়ে বাড়িওয়ালা ও এলাকার লোকজন আতংকিত। ঘাতক জহিরের কঠোর বিচারের দাবি জানান তারা।
⇘সংবাদদাতা: রকি চন্দ্র সাহা

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।