আসছে বছরের জুন মাসে খুলবে পদ্মা সেতু
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: দেশে’র কোটি কোটি মানুষে’র স্বপ্নে’র পদ্মা সেতু’র কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। মূল সেতু’র কাজে’র অগ্রগতি ৯৫ শতাংশে’র বেশি। চীনে’র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজ’র ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) দ্রæতগতিতে সেতু’র কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
নানা প্রতিক‚লতা কাটিয়ে এখন শুধু স্বপ্নধরা’র হাতছানি। ২০২২ সালে’র জুনে পদ্মা সেতু খুলে দেয়া’র টার্গেট নিয়েই চলছে শেষ পর্যায়ে’র কাজ। সেতুতে যান চলাচলে’র জন্য খুলে দেয়া’র লক্ষ্যে গত নভেম্ব’র মাস পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে’র সার্বিক কাজ এগিয়েছে ৮৯ শতাংশ। আ’র মূল সেতু’র কাজে’র অগ্রগতি ৯৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ মূল সেতু’র কাজে’র আ’র বাকি মাত্র ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে প্রতিদিন হাজা’র হাজা’র মানুষ সেতু’র দুইপার্শ্বে জড়ো হচ্ছেন সেতু দেখতে। সেতু উদ্বোধন দেখা’র জন্য মুখিয়ে ‘রয়েছেন দেশে’র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোটি কোটি মানুষ। এই সেতু নির্মাণে নদী শাসনে’র কাজ ক’রছে, চীনে’র আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো ক’রপোরেশন। আ’র সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশে’র আবদুল মোমেন লিমিটেড।
সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদে’র সম্প্রতি জানিয়েছেন টার্গেটে’র মধ্যেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা
হবে। এখন পিচ ঢালাইয়ে’র
কাজ চলছে। সেটা শেষ হলেই
শেষ। পদ্মা সেতু ২০২২ সালে’র
জুনে উদ্বোধন হবে, সেটি তো
আগেও বলা হয়েছে।
স্বপ্নে’র
পদ্মা সেতু ঘিরে দেশে’র
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে’র মানুষে’র স্বপ্নপূ’রণ হতে চলছে। মানুষে’র
ভাগ্যবদলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন
ক’রছে সেতুটি। খুলছে অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে’র
দ্বা’র। আ’রও সহজ হবে
রাজধানী’র সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলে’র যোগাযোগ। ফলে দক্ষিণাঞ্চলে’র অর্থনীতি’র
চাকা ঘোরা’র পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান। এ অঞ্চল হবে
দেশে’র শক্তিশালী অর্থনৈতিক জোন। পদ্মা সেতু
ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’র পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে’র অপা’র সম্ভাবনা বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মা
সেতু’র নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান
মো. আবদুল কাদে’র এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে,
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ
প্রকল্পে সময়-ব্যয় বাড়ছে।
প্রকল্পটি’র বাস্তবায়ন কমিটি’র সভায়ও স¤প্রতি এ’র
কা’রণ এবং যৌক্তিকতা তুলে
ধরা হয়। বাড়তি দেড়
বছ’র সময় ও ১
হাজা’র ১৭৮ কোটি টাকা
ব্যয় বাড়ানো’র কথা বলা হয়
সভায়। প্রকল্পটি’র বাস্তবায়ন কমিটি’র (পিআইসি) সভায় সভাপতিত্ব করেন
বাংলাদেশ রেলওয়ে’র মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদা’র। বিষয়টি
নিয়ে এ’রই মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ
রেলওয়ে।
রেলওয়ে
সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্প সংশোধনী প্রস্তাবে’র কাজ মাত্র শুরু
হয়েছে। এখনও চ‚ড়ান্ত
হয়নি প্রস্তাব। সময় ও ব্যয়
কম বা বেশি হতে
পারে। প্রথমে প্রস্তাব রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো
হবে, তা’রপ’রই চ‚ড়ান্তভাবে পরিকল্পনা
কমিশনে পাঠানো হবে। পরিকল্পনা কমিশন
জানিয়েছে, এই প্রকল্পে’র বিষয়ে
তাদে’র কাছে এখনও কোনো
প্রস্তাব বা তথ্য আসেনি।
প্রকল্পটিতে গত নভেম্ব’র পর্যন্ত
আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫১.৮২ শতাংশ।
এ পর্যন্ত প্রকল্পটিতে খ’রচ হয়েছে ২০
হাজা’র ৩৩৭ কোটি টাকা।
প্রকল্পে’র অগ্রগতি হয়েছে ৪৮ শতাংশ।
পরিকল্পনা
কমিশনে’র ভৌত অবকাঠামো বিভাগে’র
সদস্য মামুন-আল-’রশীদ বলেন,
এ প্রকল্পে’র বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব
এখনও আমাদে’র হাতে আসেনি। এমনকি
এই বিষয়ে কোনো চিঠিও পাইনি।
প্রস্তাব পেলে সময় ও
ব্যয় বিষয়ে কমিশন যাচাই-বাছাই করে মতামত দেবে।
জানা
যায়, দেশে’র দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে’র সাথে উত্ত’র-পূর্ব
অংশে’র সংযোগ ঘটাবে এ পদ্মা সেতু।
উন্নয়নশীল দেশে’র জন্য পদ্মা সেতু
হতে যাচ্ছে ইতিহাসে’র একটি সবচেয়ে বড়
চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্ত’র বিশিষ্ট
স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত
ট্রাস ব্রিজটি’র ওপরে’র স্তরে থাকবে চা’র লেনে’র সড়কপথ
এবং নিচে’র স্ত’রটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান চায়না মেজ’র ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলে’র
২১টি জেলা’র সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে’র যোগাযোগ
সহজ হবে। পদ্মা সেতু
নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয় ২০০৫ সালে।
প্রকল্প নেয়া হয় ২০০৭
সালে। ব্যয় ধরা হয়েছিল
১০ হাজা’র ১৬২ কোটি টাকা।
কিন্তু নানা জটিলতায় সাত
বছ’র প’র মূল সেতু’র
কাজ শুরু হয় ২০১৪
সালে। এখন পর্যন্ত ব্যয়
দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজা’র ১৯৩
কোটি টাকা। সময়মতো কাজ না হওয়া’র
পেছনে পদ্মা নদী’র অননুমেয় রূপ, বন্যায় ভাঙন,
করোনা পরিস্থিতিকে দায়ী করা হয়।
গত বছরে’র ডিসেম্বরে সেতু’র সর্বশেষ স্টিলে’র কাঠামো বা স্প্যান বসানো’র
প’র মূলত কারিগরিভাবে জটিল
কাজ শেষ হয়। যুক্ত
হয় মুন্সীগঞ্জে’র মাওয়া এবং শরীয়তপুরে’র জাজিরা
প্রান্ত। পদ্মা সেতু’র ওপ’র দিয়ে প্রতিবছ’র
কী পরিমাণ যানবাহন চলাচল ক’রবে, তা নিয়ে ২০০৯
সালে একটি বিস্তারিত সমীক্ষা
করে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক
(এডিবি)। এতে দেখা
যায়, ২০২২ সালে’র শুরুতে
যদি পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়,
তাহলে ওই বছ’র প্রতিদিন
সেতু দিয়ে চলাচল ক’রবে
প্রায় ২৪ হাজা’র যানবাহন।
২০৫০ সালে যা দাঁড়াবে
প্রায় ৬৭ হাজা’র।
সেতু
বিভাগে’র কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে
পণ্যবাহী যানবাহনে’র একটা বড় অংশ
হবে ভা’রতে’র। দেশটি’র পশ্চিমাংশ থেকে পূর্বাংশে মাল
পরিবহন হবে এই পথে।
নেপাল ও ভুটানকেও সেতুটি
যুক্ত ক’রতে পা’রবে। এতে আন্তবাণিজ্য বাড়বে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট
খ’রচ ৩০ হাজা’র ১৯৩
দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।
এসব খ’রচে’র মধ্যে ‘রয়েছে সেতু’র অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ
সড়ক, ভ‚মি অধিগ্রহণ,
পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি। বাংলাদেশে’র
অর্থ বিভাগে’র সঙ্গে সেতু বিভাগে’র চুক্তি
অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯
হাজা’র ৮৯৩ কোটি টাকা
ঋণ দিয়েছে স’রকা’র। ১ শতাংশ সুদ
হারে ৩৫ বছরে’র মধ্যে
সেটি পরিশোধ ক’রবে সেতু কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথে’র
মাধ্যমে দেশে’র কেন্দ্রে’র সাথে দক্ষিণ-পশ্চিম
অংশে’র সরাসরি সংযোগ তৈরি ক’রবে।
এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলে’র সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে
উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। প্রকল্পটি দেশে’র পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক
উন্নয়নে’র জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ
অবকাঠামো হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে ভবিষ্যতে গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবা’র
অপটিক কেবল সম্প্রসা’রণে’র ব্যবস্থা
‘রয়েছে। পদ্মা সেতু চালু’র প’র
এ’র পূর্ণ সদ্ব্যবহা’র এবং দক্ষিণ ও
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে’র আর্থসামাজিক উন্নয়নে গত এক দশকে
বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত
হয়েছে। এ’র মধ্যে ঢাকা
থেকে যশো’র পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্প চলমান আছে। ঢাকা থেকে
ফরিদপুরে’র ভাঙা পর্যন্ত সেতু’র
দুই প্রান্তে ৫৫ কিলোমিটা’র দীর্ঘ
এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
পদ্মা
সেতু প্রকল্পে’র সর্বমোট বাজেটে’র মধ্যে গত নভেম্ব’র মাস
পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৬
হাজা’র ৪৭৬ কোটি ৩৩
লাখ টাকা বা মোট
বাজেটে’র ৮৭ দশমিক ৬৯
শতাংশ। মূল সেতু’র কাজে’র
চুক্তিমূল্য প্রায় ১২ হাজা’র ৪৯৩
কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
যা’র মধ্যে চলতি বছরে’র নভেম্ব’র
মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায়
১১ হাজা’র ৫১২ কোটি ৭৯
লাখ টাকা। এদিকে সেতু প্রকল্পে’র আওতায়
নদী শাসনে’র কাজে’র অগ্রগতি হয়েছে সাড়ে ৮৬.৫০
শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি
হয়েছে ৭৮.৩৭ ভাগ।
নদী শাসন কাজে’র চুক্তিমূল্য
৮ হাজা’র ৯৭২ কোটি ৩৮
লাখ টাকা’র মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৭
হাজা’র ৩১ কোটি ৭১
লাখ টাকা।
প্রকৌশল
বিভাগ জানায়, মূল সেতু’র মধ্যে
২ হাজা’র ৯১৭টি রোডওয়ে সøাব, ২
হাজা’র ৯৫৯টি রেলওয়ে সøাব ও
৫ হাজা’র ৮৩৪টি শেয়া’র পকেট বসানো হয়েছে।
১২ হাজা’র ৩৯০টি প্যা’রপেট ওয়ালে’র মধ্যে ১২ হাজা’র ২৫৪টি
স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। আ’র মাওয়া ও
জাজিরা’র ভায়াডাক্টে ৪৩৮টি সুপা’রটি গার্ডারে’র মধ্যে ৪৩৮টি এবং ৮৪টি রেলওয়ে
আই গার্ডারে’র মধ্যে ৮৪টিই স্থাপন করা হয়েছে। মূল
সেতু’র মোট ৪১টি ট্রাস
‘রয়েছে, যা’র সবগুলো এ’রই
মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। যা’র
দৈর্ঘ্য ৬ হাজা’র ১৫০
মিটা’র বা ৬ দশমিক
১৫ কিলোমিটা’র। এদিকে সেতু’র দুইপাশে সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস
এরিয়া’র কাজ এ’র মধ্যেই
শতভাগ শেষ হয়েছে। এতে
ব্যয় হয়েছে ১ হাজা’র ৪৯৯
কোটি ৫১ লাখ টাকা।
এছাড়া ভ‚মি অধিগ্রহণ,
পুনর্বাসন ও পরিবেশ খাতে
বরাদ্দ ৪ হাজা’র ৩৪২
কোটি ২৬ লাখ টাকা।
অন্যান্য (পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট
ও আয়ক’র, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি
এবং অন্যান্য) খাতে বরাদ্দ ২
হাজা’র ৮৮৫ কোটি ৩৬
লাখ টাকা। সেতু’র অবশিষ্ট কাজে’র মধ্যে ওয়াটা’র প্রæফিং মেমব্রিনে’র
কাজ ১৩ ভাগ, কার্পেটিং-২ দশমিক ০৫
ভাগ, মুভমেন্ট জয়েন্ট ৫৯ ভাগ, ল্যাম্পপোস্ট
৯ দশমিক ৩০ ভাগ কাজ
এগিয়েছে। সেতুতে রেলওয়ে ১০০ ভাগ সম্পন্ন।
এছাড়া গ্যাস পাইপ লাইন ৪৯
দশমিক ৩৫ ভাগ এবং
৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ লাইনে’র কাজ ৬২ ভাগ
সম্পন্ন হয়েছে।
মাদারীপুরে’র
শিবচরে’র সবজি চাষি বাদল
স’রদা’র বলেন, সেতু’র অভাবে তাদে’র পণ্য ঢাকায় পাঠাতে
খ’রচ বেশি হয়। ফেরি’র
জন্য ঘণ্টা’র প’র ঘণ্টা অপেক্ষা
ক’রতে হয়। এতে পরিবহন
ভাড়া বেশি গুণতে হয়
যা লাভ হয় অর্ধেক
অংশ গাড়ি ভাড়ায় খ’রচ
হয়ে যায়। যাতায়াতে দীর্ঘসময়
ব্যয় হওয়াতে কাঁচামাল অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়।
সেতুটি চালু হলে সহজে
বাজা’র ধরা যাবে। পরিবহন
খ’রচও কমবে। জুলহাস নামে পিকআপ চালক
বলেন, পিকআপ-ভ্যান দিয়ে কাঁচামাল পরিবহন
করেন। যমুনা নদী’র ওপ’র বঙ্গবন্ধু সেতু
হওয়া’র প’র ওই অঞ্চল
থেকে সবজিসহ নানা পণ্য ঢাকায়
বেশি পরিমাণ আসে। এখন যমুনা
সেতু হয়ে চলাচলকারী এখন
যানবাহনে’র সংখ্যা অনেক বেশি। তেমনিভাবে
পদ্মা সেতু খুলে দেয়া
হলে সবধ’রনে’র পণ্য পরিবহন করা
সহজ হবে। এ অঞ্চলে’র
সবজি নিয়ে গেলে ফেরি
পারাপারে’র সমস্যা থাকবে না। ঢাকা’র কা’রওয়ান
বাজারে যেতে সময় লাগবে
কম। ট্রাক চালক জাকি’র মিয়া
বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে’র লোকজন পদ্মা সেতু’র অপেক্ষায় খুলে দেয়া’র অপেক্ষায়।
তারা সেতু চালু হলে
সহজে শস্য, সবজি ও মাছ
ঢাকায় পাঠাতে পা’রবেন। উদ্যোক্তারা অপেক্ষায় পুঁজি নিয়ে, সেতু চালু হলে
কাঁচামাল ও পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে
তাই শিল্পকা’রখানা গড়ে উঠতে শুরু
করেছে।
প্রকল্পে’র
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম দিকে পদ্মা নদী’র
তলদেশে’র মাটি খুঁজে পেতে
বেগ পেতে হয় সেতু
নির্মাণকারী প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদে’র। তলদেশে
স্বাভাবিক মাটি পাওয়া যায়নি।
সেতু’র পাইলিং কাজ শুরু’র পরে
সমস্যা দেখা যায়। প্রকৌশলীরা
নদী’র তলদেশে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় মাটি’র বদলে নতুন মাটি
তৈরি করে পিলা’র গাঁথা’র
চেষ্টা করে। স্ক্রিন গ্রাউটিং
নামে’র এ পদ্ধতিতেই বসানো
হয় পদ্মা সেতু। এ সেতু ঘিরে
তিনটি বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে। পদ্মা সেতু’র খুঁটি’র নিচে সর্বোচ্চ ১২২
মিটা’র গভীরে স্টিলে’র পাইল বসানো হয়েছে।
এসব পাইল তিন মিটা’র
ব্যাসার্ধে’র। বিশ্বে এখনো পর্যন্ত কোনো
সেতু’র জন্য এত গভীরে
পাইলিং প্রয়োজন হয়নি এবং মোটা
পাইল বসানো হয়নি। ভ‚মিকম্প থেকে
‘রক্ষা পেতে এই সেতুতে
ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ে’র সক্ষমতা হচ্ছে ১০ হাজা’র টন।
এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন
সক্ষমতা’র বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটা’র স্কেলে ৯ মাত্রা’র ভ‚মিকম্পে টিকে থাকা’র মতো
করে পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে।
পদ্মা সেতু’র নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদে’র বলেন, ২০১৪ সালে’র ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু’র নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালে’র ৩০ সেপ্টেম্ব’র ৩৭ ও ৩৮ নম্ব’র খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানো’র মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এ’রপ’র একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটা’র দৈর্ঘ্যরে ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটা’র দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালে’র ১০ ডিসেম্ব’র। সর্বশেষ সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুসারে, আগামী বছরে’র জুনে’র মধ্যে প্রকল্পে’র কাজ শেষ করা’র কথা। মূল সেতু নির্মাণে কাজ ক’রছে চীনে’র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজ’র ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনে’র কাজ ক’রছে দেশটি’র আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো ক’রপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশে’র আবদুল মোমেন লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু’র কাঠামো। আগামী বছ’র ২০২২ সালে’র জুন মাসে যানবাহন চলাচলে’র জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেয়া’র কথা ‘রয়েছে বলে জানান তিনি।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।