শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের তুরা রোড গুচ্ছগ্রাম হতে ভায়া চর বামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে উত্তর দিকে পাঁকা রাস্তা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার আঞ্চলিক রাস্তাটি পাঁকা করণ না হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গ্রামের মানুষের চরম দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসিরা জানান, তুরা রোড হতে চরবামনের চর পাঁকা রাস্তা পর্যন্ত প্র্য়া ২ কি.মি রাস্তা দিয়ে চরবামনের চর ও বামনের চর গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন।
গত বছর মঙ্গার শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে তুরা রাস্তার আবুল হোসেনের মোড় হতে চরবামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এই রাস্তাটি উচুকরণ করা হয়েছে। পানি নিস্কাশনের জন্য সরকারি ভাবে একটি কালভার্ড নির্মাণ করা হয়েছে।
কিন্তু রাস্তাটি পাঁকা করা হয়নি। অপর দিকে ওই বিদ্যালয়ের উত্তর দিকে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার মাটি ভরাট না করায় রেকর্ডভুক্ত রাস্তা থাকলেও জমির মালিকরা তা দখল করে নিয়েছে। ফলে যাতায়াতে এলাকাবাসি চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামের পাশদিয়ে চলে যাওয়া কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার করা হচ্ছে না। তুরা রাস্তার সংযোগ আবুল মিয়ার বাড়ি হইতে চরবামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাটি ঝড় বৃষ্টি মৌসুমে কর্দমা রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসীকে চলাচল করতে হয়। এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল।
রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য হাটে বাজারে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট করতে হয়। রাস্তার পাশে ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি হাফেজি মাদ্রাসা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে ও রোগীদের হাসপাতালে আশা-যাওয়ায় কষ্টের শেষ থাকে না।
চরবামনের চর গ্রামের মো. তানভির হোসেন জানান, আমাদের আয়ের একমাত্র উৎস কৃষি। কিন্তু সেই উৎপাদিত কৃষিপণ্য ধান, সরিষা, ভুট্টা, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে গেলে আমরা বাজার মূল্যের চেয়ে কম পাই। আমাদের অধিক গাড়ি ভাড়া দিয়ে ধান হাটে নিতে হয়। এতে কৃষকের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। তিনি আরো জানান, গত বছর কর্মশৃজন কর্মসূচী (মঙ্গা’র) শ্রমিক দিয়ে রাস্তা সংস্কার করেছিল। এছাড়া উপজেলা প্রকৌশল অফিসে রাস্তাটি পাঁকা করণের জন্য আবেদন করেছিলেন গত বছর। তখন আমাদের শুধু আশস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এক বছর অতিবাহিত হলেও কোনো খবর নেই।
চরবামনের চর গ্রামের মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সময় সকল এমপি ও চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বারবার রাস্তাটি পাঁকা করণের প্রতিশ্রæতি দিলেও পরে মনে থাকে না। আমরা খুব কষ্টে যাতায়াত করছি।
চরবামনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ জানান, বর্ষা মৌসুম সহ বিভিন্ন সময়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদার সৃষ্টি হয়। রিক্সা, ভ্যান তো দুরের কথা, মোটরসাইকেল পর্যন্ত চলাচল করতে পারে না। স্কুলের শিশু বাচ্চারা অনেক কষ্টে স্বুলে আসা-যাওয়া করে। আমি এই রাস্তাটি মেরামত সহ পাঁকা করণের জন্য প্রশাসনের কাছে সুদৃষ্টি কমনা করছি।
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, কয়েকটি গ্রামের মানুষের বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতে খুব কষ্ট করতে হয়। বিশেষ করে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে অধিক ব্যয় করতে হয়।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুরুল হক জানান, রাস্তাটির ব্যাপারে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল কুমার হালদার মোবাইল ফোনে বলেন, রাস্তাটি বিষয়ে জানতে পেয়েছি এবং ইঞ্জিনিয়ারকে বলা হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই কাজ করা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।