
জামালপুর প্রতিনিধি॥ জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আব্দুল খালেক (৪২) নামের এক আওয়ামীলীগ কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো.সোলাইমান হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ১১টার দিকে এই উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের ভিতর এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল খালেক দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহরের ঢালবাড়ী এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি দেওয়ানগঞ্জ এ.কে মেমোরিয়াল কলেজের সাবেক ছাত্রলীগের জিএস ছিলেন।
বর্তমানে তিনি আওয়ামীগের একজন কর্মী ছিলেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ঢালবাড়ী এলাকার আব্দুল বাছেদের ছেলে পৌরসভার ৫ নং ওয়াড যুবলীগের সদস্য মো.মুসলিম উদ্দিন (৩০), ডিঘিপাড়া এলাকার ছলিম উদ্দিনের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জন আনার আলী (৪৫), বাদে শশাড়িয়া এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলের পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো.মামুন (৩৮)।
তাঁরা তিনজনই জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও দেওয়ানগঞ্জ এ.কে মেমোরিয়াল কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুবেল খান (২৪) আহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই নৌকাপ্রতীকের প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে নৌকাপ্রতীকের প্রার্থী আবুল কালামের প্রচার-প্রচারণা শেষে প্রার্থীর ভাজিতা চুড়াইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সেলিম খান ও তাঁরা সবাই এক সঙ্গে ওই পরিষদ ভবনের ভিতর খিঁচুরি খাচ্ছিল। এ সময় হেলমেট পড়া অবস্থায় মোটরসাইকেল যোগে ৩০-৩৫ জনের একদল যুবক ওই কক্ষের মধ্যে এলোপাথারি গুলি করেন। এতে আব্দুল খালেকসহ তাঁরা চারজন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সবাইকে উদ্ধার করে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক আব্দুল খালেককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকী তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। এতে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মো.মুসলিম বাদি হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী মো.সোলাইমান হোসেনকে প্রধান করে ৩১ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
চুড়াইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সেলিম খান বলেন,‘নৌকাপ্রতীকের প্রার্থী আমার চাচা। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে আমরা সবাই প্রচারণা চালায়। পরে রাত ১১টার দিকে পরিষদ ভবনের আমার কক্ষে বসে সবাই খিুঁচুড়ি খাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ করে একদল অস্ত্রধারী কক্ষের মধ্যে অসংখ্যা গুলি করে পালিয়ে যান। গুলিতে আব্দুল খালেক মারা যান এবং তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে গিয়েছি। আমার কক্ষের মধ্যে অসংখ্যাগুলির চিহৃ রয়েছে।’
নিহতের শ্বশুর জমির আলী (৭৭) জানান, আমার মেয়ের জামাইকে নৌকাপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিজয় ছিনিয়ে নিতেই এই হত্যার পরিকল্পনা করে এ হত্যা কান্ডটি ঘটিয়েছে। আমি এই হত্যা কান্ডের বিচার চাই। কারণ আমার এক মেয়ের জামাইকে হত্যা করে আমার অন্যমেয়ের জামাইকে ফাসাতেই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে আবুল কালাম আজাদের লোকজন।
দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আমিনুল ইসলাম বলেন,‘মো.সোলাইমান হোসেনকে প্রধান করে ৩১ জনের নামসহ অজ্ঞাত নামা আসামি করা হয়েছে। মো.সোলাইমান হোসেনের নেতৃত্বে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
⇘সংবাদদাতা: জামালপুর প্রতিনিধি

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।