সেবা ডেস্ক: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার দুর্গম জগাপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল)-এর সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।
![]() |
খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউপিডিএফ-এর গুলিবিনিময়, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার |
এ সময় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সুবিধা নিয়ে সশস্ত্র দলটি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দীর্ঘদিন ধরে অভিযান চলছে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে পানছড়ির জগাপাড়া এলাকায় টহল দল ইউপিডিএফ-মূল-এর এক সন্দেহভাজন সক্রিয় সদস্যের বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় ওই এলাকায় অবস্থানরত ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সশস্ত্র দল সেনাবাহিনীর ওপর হঠাৎ গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনীও পাল্টা গুলি চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
গুলিবিনিময়ের পর সশস্ত্র দলটি পাহাড়ি এলাকার ঘন ঝোপঝাড় ও দুর্গম পথের সুবিধা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালিয়ে একটি রাশিয়ান পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২০০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, একটি ওয়াকিটকি সেট এবং ইউনিফর্মসহ আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সেনাবাহিনী জানায়, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ ইউপিডিএফ-মূল-এর নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হতো।
আরও পড়ুন:
এ ঘটনায় জড়িত সশস্ত্র সদস্যদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পানছড়ি থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, "পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল জাতিগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। ইউপিডিএফ-মূল-সহ যেকোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্গম এলাকায় তাদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।"
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জগাপাড়া এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অবাধ বিচরণ ও চাঁদাবাজির কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছিল। সেনাবাহিনীর অভিযানে এলাকার পরিস্থিতি কিছুটা স্বস্তির হলেও আতঙ্ক এখনো কাটেনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পরও এ অঞ্চলে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতি ও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। ইউপিডিএফ-মূল দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সক্রিয় রয়েছে, যদিও তাদের কর্মকাণ্ডকে সরকার নাশকতামূলক বলে অভিহিত করে আসছে। সর্বশেষ ঘটনায় অস্ত্র উদ্ধারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
সেনাবাহিনী নিয়ে আরও পড়ুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।